বিমান দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনাকে ছাপিয়ে আলোচনায়- এই অবিশ্বাস্য বেঁচে ফেরা। দগ্ধ বিমানে কীভাবে টিকে রইলেন তারা? কাজাখস্তানের আক্তাউ শহরের কাছে আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে।
দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া সুভোনকুল রাখিমভ বলেন, “বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর মনে হয়েছিল, বিমানটি ভেঙে পড়বে। তখন আমি প্রার্থনা শুরু করেছিলাম।” আরেক যাত্রী ভাফা শাবানোভা জানান, তিনি দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন এবং বিমানকর্মীরা তাকে পেছনের দিকে যেতে বলেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে একজন যাত্রী বলেন, অন্তত একটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। আমি ভেবেছিলাম আমি মারা যাচ্ছি।"
বিমান দুর্ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে আজারবাইজানে। তদন্ত শুরু হয়েছে কাজাখস্তানেও। বিধ্বস্ত উড়োযানের ব্ল্যাকবক্স ফ্লাইট রেকর্ডার উদ্ধার করা হয়েছে। রুশ গণমাধ্যম বলছে, পাখির ঝাঁকের সাথে সংঘর্ষ হতে পারে দুর্ঘটনার কারণ। তবে এ বিষয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ।
গত ২৫ ডিসেম্বর কাজাখস্তানের আক্তাউ শহরের কাছে আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট J2-8243 বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি রাশিয়ার গ্রোজনি শহরে যাওয়ার কথা থাকলেও দিক পরিবর্তন করে কাজাখস্তানে অবতরণের চেষ্টা করছিল। দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৮ জন নিহত এবং ২৯ জন আহত হন।
এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ এই দুর্ঘটনার জন্য “শারীরিক এবং প্রযুক্তিগত বাহ্যিক হস্তক্ষেপ” দায়ী বলে দাবি করেছে, তবে বিস্তারিত জানায়নি।
চারটি সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভুলবশত বিমানটিকে গুলি করে নামাতে পারে। তবে রাশিয়া এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছে।
ড্রোন যুদ্ধ এবং রুশ-ইউক্রেন সংঘাতের কারণে বেসামরিক বিমান চলাচল এখন চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। দুর্ঘটনার স্থানটি ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রায় ৮৫০ কিলোমিটার দূরে হলেও, এটি রুশ ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আওতাধীন।
রুশ কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমানটি ঘন কুয়াশা এবং ড্রোন হামলার সতর্কবার্তার কারণে বিকল্প গন্তব্য হিসেবে কাজাখস্তানের আক্তাউয়ে অবতরণের সিদ্ধান্ত নেয়। তদন্ত চলছে, তবে এই দুর্ঘটনা আধুনিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বেসামরিক বিমান চলাচলের নিরাপত্তার উপর গভীর প্রশ্ন তুলেছে।